কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে। আরো বিস্তারিত জানব কলা কাদের খাওয়া উচিত কাদের উচিত নয় বা প্রতিদিন কলা খেলে কি হয়? কলা কি শরীরের জন্য উপকার নাকি ক্ষতিকর? 

কলা-খাওয়ার-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

এই সকল বিষয়গুলো আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা জানতে পারবো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত তথ্যগুলো।

সূচিপত্র: কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কলা পুষ্টি মনে ভরপুর একটি ফল। যা শক্তি বাড়ে সহায়তা করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং মেজাজ উন্নত করে। তবে কাঁচা কলা বেশি খেলে এসিডিটি বা হজমের সমস্যা হতে পারে এবং যাদের ঠান্ডা বা সর্দি কাশি আছে তাদের কলা এড়িয়ে চলা উচিত। 

কারণ এতে ঠান্ডা বা সর্দি কাশি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। তবে কলায় ভিটামিন সি রয়েছে, যা হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং এতে অনেক পুষ্টিগুণ এখন রয়েছে নিচে আরো বিস্তারিত দেওয়া হলো।

প্রতিদিন কলা খেলে কি হয়? 

প্রতিদিন কলা খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে, হজম ভালো হয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে এবং হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত হয়। কারণ এতে পটাশিয়াম, ভিটামিন বি⁶ ও ফাইবার থাকে। এছাড়া এটি মেজাজ ভালো ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

প্রতিদিন কলা হাওয়ার উপকারিতা: 

শক্তি বৃদ্ধি: 

কলা কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস। যা দ্রুত শক্তি যোগায়। তাই শরীর দুর্বল লাগলে এটি একটি চমৎকার বিকল্প।

হজম উন্নত করে: 

ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:

কলায় থাকা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে রক্ত চাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

হৃদ যন্ত্রের স্বাস্থ্য: 

পটাশিয়াম হার্টের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে ও হৃদ রোগের ঝুকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আরো পড়ুনঃইসলামী ব্যাংক সেভিংস একাউন্ট সুবিধা অসুবিধা এবং চার্জ

ওজন নিয়ন্ত্রণ: 

কলা ফাইবার ও শর্করা পেট ভরা রাখে ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে। 

মেজাজ ভালো রাখে: 

কলা মুড ভালো রাখতে এবং বিষন্নতা কমাতে সাহায্য করে থাকে। 

হাড় মজবুত করে:

কলা হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। এতে হাড় শক্তিশালী হয়।

ভিটামিন বি⁶ এর চাহিদা পূরণ: 

কলাতে থাকা ভিটামিন বি⁶, যা হিমোগ্লোবিন গঠন এবং শরীরের এনজাইম বিক্রিয়ায় সহায়তা করে।

সতর্কতা: 

অতিরিক্ত কলা খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে। 

কিছু রোগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে বা মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে। তাদের বেশি কলা খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। কারণ কলায় থাকা ফ্রুক্টোজ  শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।

খালি পেটে কলা খেলে কি হয়? 

খালি পেটে কলা খেলে কিছু উপকার থাকলেও, এতে থাকা প্রাকৃতিক এসিড ও খনিজ উপাদান (যেমন, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম) রক্তের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং পেট জ্বালা বা গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে। তাই সকালে পুষ্টিকর খাবারের সাথে বা অন্য খাবারের পরে কলা খাওয়া ভালো। 

উপকারিতা: 

শক্তি যোগায়: 

কলা থেকে শরীর দ্রুত শক্তি পায়। যা সকালে নাস্তা বা ব্যায়ামের আগে খেলে উপকারী হতে পারে। 

হজমে সহায়তা করে: 

কলায় থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

পটাশিয়াম এর উৎস: 

পেশির  সঠিক কার্যকারিতা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে পটাশিয়াম অপরিহার্য। যা কলা থেকে পাওয়া যায়।

সম্ভাব্য অসুবিধা: 

পেট জ্বালা ও গ্যাস: 

কলার প্রাকৃতিক অ্যাসিড খালি পেটে খেলে পেট জ্বালা, অম্বল বা গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। 

ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ভারসাম্যহীনতা: 

খালি পেটে কলার ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম একসঙ্গে বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে, রক্তে এই খনিজ গুলোর ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। যা হৃদপিণ্ড ও ধমনীর জন্য ক্ষতিকর।

রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি:

কলায় থাকা শর্করা ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজ খালি পেটে খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ ই বাড়িয়ে দিতে পারে।

কখন কলা খাবেন না:

সকালে একেবারে খালি পেটে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের খালি পেটে কলা খাওয়া উচিত নয়। কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিকল্প:

খালি পেটে কলা না খেয়ে, লাল আটার রুটি, পাউরুটি, ওটস বা অন্যান্য ফলের সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেতে পারেন।

অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের সাথে কলা খেলে কলার অ্যাসিডিক প্রভাব কমে যায় এবং খনিজ উপাদানগুলো শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করে।

প্রতিদিন কয়টি কলা খাওয়া উচিত?

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দিনে 1-2 মাঝারি আকারের কলা খাওয়া নিরাপদ বা উপকারী বলে বিবেচিত হয়। কারণ এটি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার সরবরাহ করে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কলা খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। যেমন, যাদের ডায়াবেটিস আছে অথবা যারা ওজন বাড়াতে চান না তাদের সতর্ক থাকা উচিত।

কলা খাওয়ার উপকারিতা: 

পুষ্টিগুণে ভরপুর: 

কলায় থাকে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি⁶, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

শক্তি সরবরাহ করে: 

কলা তাৎক্ষণিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে তাই, ব্যায়ামের আগে বা সকালে নাস্তার সাথে এটিই খাওয়া ভালো। 

হজম শক্তি উন্নত করে: 

কলায় থাকা ফাইবার হজমের সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং হজম শক্তি উন্নত হয়। 

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: 

পটাশিয়ামের উপস্থিতির কারণে, কলা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদপিন্ডের চাপ কমাতেও সাহায্য করে। 

মানসিক স্বাস্থ্য: 

কলায় থাকা ট্রিপ্টোফান নামক উপাদান মেজাজ ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং টেনশন মুক্ত রাখে।

কখন কলা খাওয়া উচিত নয়:

অতিরিক্ত পাকা কলা: 

বেশি পাকা কলা খেলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে, যাতে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য: 

যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এতে ফ্রুক্টোজ থাকে।

ওজন বাড়াতে চাইলে: 

কলায় ক্যালরি ও শর্করা থাকায় বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে।

শীতকালে ঠান্ডা লাগলে: 

বেশি পরিমাণে কলা খেলে ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বাড়ে। যা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট অনুভূত করায়।

শিশুদের জন্য: 

শিশুদের দিনে 1 টি করে কলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে তাদের জন্য কলার পরিমাণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কলা কাদের খাওয়া উচিত নয়?

আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এই ফল। তবে কিছু মানুষের জন্য এই ফল বা কলা খাওয়া উচিত নয়। কারণ কলা সেইসব মানুষের খাওয়া উচিত নয় বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস আছে, এলার্জী সমস্যা আছে বা ঠান্ডা বা সর্দি কাশি আছে তাদের জন্য কলা ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এলার্জি সমস্যা থাকা মানুষজন কলা খেলে চুলকানি ও শ্বাস নেওয়ার সমস্যা হতে পারে। তাই যাদের ডায়াবেটিস বা এলার্জি জাতীয় সমস্যা থাকলে কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

পাকা কলা খেলে কি হয়?

অতিরিক্ত পাকা কলা বা বেশি পরিমাণে কলা খেলে কিছু শারীরিক সমস্যা হতে পারে। যেমন: রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি, ওজন বৃদ্ধি, মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথা এবং কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও অতিরিক্ত পেকে  গেলে কলার ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

ক্ষতিকর দিকগুলো:

রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি:

অতিরিক্ত পাকা কলায় চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দিতে পারে।

ওজন বৃদ্ধি:

বেশি পরিমাণে কলা খেলে ক্যালরি ও শর্করা বেশি জমা হওয়ায় ওজন বাড়তে পারে।

মাইগ্রেনের সমস্যা:

আরো পড়ুনঃফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোন ল্যাপটপটি ভালো

কলায় থাকা ট্রিপ্টোফান নামক উপাদান কিছু মানুষের মাইগ্রেন বা মাথা ব্যথা বাড়াতে পারে।

কিডনি রোগীদের জন্য সমস্যা:

কলায় পটাশিয়াম বেশি থাকায় কিডনি রোগীদের জন্য অতিরিক্ত কলা গ্রহণ ক্ষতিকর হতে পারে।

হজমে সমস্যা:

অতিরিক্ত পেটে গেলে কলায় ফাইবারের পরিমাণ কমে যেতে পারে এবং ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারে। যা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

কাদের এড়িয়ে চলা উচিত:

ডায়াবেটিস রোগী কিডনি রোগী মাইগ্রেনের রোগী এবং যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে।

পরামর্শ:

পরিপক্ক ও অতিরিক্ত পেটে যাওয়া কলা খাওয়া ভালো।

নিজের শারীরিক অবস্থা বুঝে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাওয়া উচিত।

কলা খাওয়ার পর কি খাওয়া উচিত নয়?

কলা খাওয়ার পর পানি, দুধ এবং উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত নয়। কারণ এগুলোতে হজমের সমস্যা গ্যাস, অম্বল এবং পুষ্টির ঘাটতি ঘটাতে পারে। কলা খাওয়ার পর এই খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন বিশেষ করে যদি আপনার গ্যাস্ট্রিক বা হজম সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকে। 

কলা-খাওয়ার-পর-কি-খাওয়া-উচিত-নয়

যে খাবারগুলো কলা খাওয়ার পর এড়িয়ে চলা উচিত: 

পানি: 

কলা খাওয়ার পর পরই পানি পান করলে তা হজম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং গ্যাস বা পেট ফাঁপার কারণ হতে পারে। কলার পটাশিয়াম পানির সাথে মিশে এসিড তৈরি করে। যা এই সমস্যাগুলো বাড়িয়ে তোলে।

দুধ এবং দুগ্ধ জাত পণ্য: 

কলা ও দুধ একসঙ্গে খেলে তা পুষ্টির মাত্রা অতিরিক্ত করে তোলে এবং পাচন প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে। ফলে হজম হতে চায় না এবং পেট ফুলে থাকা বা শারীরিক অস্বস্তি হতে পারে। 

উৎসব প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার: 

কলা খাওয়ার পর উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার খেলে তা হজম করতে অসুবিধা হতে পারে। কারণ কলা নিজেও হজম হতে কিছুটা সময় নেয়।

অ্যাসিডিক খাবার: 

কিছু প্রতিবেদনে উল্লেখ করা রয়েছে কলার পটাশিয়াম পানির সাথে মিশে এসিড তৈরি করতে পারে। তাই কলা খাওয়ার পর অ্যাসিডিক খাবার খেলে সমস্যা বাড়তে পারে।

কখন কলা খাওয়া উচিত নয়: 

কিডনি রোগ থাকলে: 

কলা পটাশিয়ামের একটি সমৃদ্ধ উৎস। যাদের কিডনি রোগ আছে এবং পটাশিয়াম খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে, তাদের কলা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। 

অ্যাসিড রিফ্লাক্স: 

যাদের এসিডিটির সমস্যা আছে তাদের কলা খাওয়ার পর পানি পান করা উচিত না। কারণ এটি এসিডিটি বাড়াতে পারে। 

কলা খেলে কি রক্তচাপ কমে?

হ্যাঁ, কলা খেলে রক্তচাপ কমে। কলায় উচ্চ পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। যা শরীরে সোডিয়ামের প্রভাবকে ভারসাম্যপূর্ণ করে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। প্রতিদিন নিয়মিত কলা খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে এবং হৃদয়ের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

কলা কিভাবে কাজ করে: 

পটাশিয়াম এর উৎস: 

কলা পটাশিয়ামে ভরপুর যা, রক্তে সোডিয়ামের অতিরিক্ত প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।

হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য:

পটাশিয়াম রক্ত নালীকে শিথিল করতে সাহায্য করে। ফলে রক্তচাপ কমে আসে এবং হৃদপিন্ডের উপর চাপ কমে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: 

কলাতে থাকা ফাইবার বা আঁশ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। যা অতিরিক্ত খাওয়া কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। 

অন্যান্য উপকারিতা: 

হজম শক্তি বৃদ্ধি: 

কলার ফাইবার হজম প্রক্রিয়া সহজ করে এবং অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে। 

শক্তি সরবরাহ: 

কলা শর্করা সমৃদ্ধ এবং প্রচুর ভিটামিন সমৃদ্ধ। যা তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখে। 

সতর্কতা: 

যদিও কলা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে উপকারী। তবে এটি একটি সম্পূর্ণ চিকিৎসা নয়। যে কোন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

একটা কলা কত ক্যালরি থাকে?

একটি মাঝারি আকারে গলায় প্রায় 100-105 ক্যালরি থাকে। কলার আকার পরিপক্কতা এবং জাতের উপর ক্যালরি পরিমাণ কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

কলাতে ক্যালরি ছাড়া অন্যান্য পুষ্টি উপাদান: 

  • কার্বোহাইড্রেট: প্রায় 27 গ্রাম।
  • ফাইবার: প্রায় 3 গ্রাম।
  • প্রোটিন: প্রায় 1 গ্রাম।
  • ভিটামিন ও খনিজ: যেমন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি⁶ এবং পটাশিয়াম।
  • অতএব বলা যায়, কলা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল যা তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে।

কলা কখন খাওয়া উচিত নয়? 

কলা খালি পেটে বিশেষত পাকা কলা খাওয়া উচিত নয়। কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। যা দুর্বলতা ও হজমের সমস্যা তৈরি করতে পারে। এছাড়াও যাদের সর্দি বা অ্যালার্জি সমস্যা আছে। তাদের রাতে কলা না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে হজম হতে সময় লাগে এবং ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বাড়তে পারে। 

কলা কখন খাবেন না: 

খালি পেটে:

  • শুধু পাকা কলা খালি পেটে খেলে হঠাৎ করে রক্তে শর্করা বেড়ে যেতে পারে। যা পরে দ্রুত কমে গিয়ে দুর্বলতা সৃষ্টি করে। এর পরিবর্তে অন্য খাবারের সাথে যেমন, বাদামের সাথে কলা খাওয়া যেতে পারে। যা শক্তির ধীরে ধীরে নিঃসরণে সাহায্য করে। 

রাতের বেলায়: 

  • যাদের ঠান্ডা লেগেছে বা সর্দির সমস্যা আছে তাদের রাতে কলা না খাওয়াই ভালো। কারণ কলা হজম হতে সময় নেয় এবং এটি ঠান্ডার ফল হওয়ায় সর্দি বা ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বাড়তে পারে। 

আরো পড়ুনঃ  ফ্রিল্যান্সিং করে ঘরে বসে ইনকাম করার ১১ টি টিপস

কিছু নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে: 

  • অ্যাজমা বা নাকে পানি ঝরার মতো এলার্জির সমস্যা থাকলে কলা খেলে সমস্যা হতে পারে।

অন্য খাবারের সাথে:

  • দুধ ও কলা একসঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। কারণ এগুলো একসঙ্গে হজম হওয়ার সহজ নয় এবং এতে অপকার হতে পারে। যদিও কিছু মানুষের পছন্দের খাবার তবুও এটি খাওয়া স্বাস্থ্য অপকারিতা।

কখন কলা খাওয়া উপকারী:

সকালে নাস্তার সাথে: 

  • সকালে নাস্তা সঙ্গে বা পরে কলা খেলে তা শক্তি যোগায় এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

ব্যায়ামের পর: 

  • ব্যায়ামের পর শরীরের শক্তি যোগাতে কলা একটি চমৎকার ফল হিসেবে কাজ করে থাকে। 

হজমে সহায়তার জন্য: 

  • ফাইবারে ভরপুর কলা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে এবং পেট ফাঁপা দূর করে। 

কলা খেলে কি পেট পরিষ্কার হয়? 

কলা আছে প্রচুর ফাইবার বা আঁশ এই ফাইবার হজম প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার খাবার পরিপাকতন্ত্রের মধ্য দিয়ে সহজে চলাচল করতে সাহায্য করে। 

কলা-খেলে-কি-পেট-পরিষ্কার-হয়

এতে মল নরম হয় এবং পেট পরিষ্কার হয় সহজে। তাই কলা খেলে হজম শক্তি ভালো হয় এবং পেট পরিষ্কার রাখতেও এটি ভীষণ ভাবে উপকারী। তবে অতিরিক্ত কলা খেলে এসিডিটি বা হজমের  সমস্যা হতে পারে।

কলা খাওয়ার উপকারিতা?

শক্তি বৃদ্ধি:

  • কলায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও গ্লুকোজ থাকে যা তাৎক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করে।

হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য:

  • কলায় থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

মেজাজ ও ঘুম:

  • কলা খেলে সেরোটোনিন (যা ভালো অনুভূতির জন্য দায়ী) উৎপাদন বাড়ে, ফলে মেজাজ ভালো থাকে এবং ভালো ঘুম হয়।

অ্যান্টি অক্সিডেন্ট:

  • কলাতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ:

  • কলার ফাইবার ও শর্করা পেট ভরা রাখে। যা অতিরিক্ত খাওয়া কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

কলা খাওয়ার অপকারিতা?

হজমে সমস্যা:

  • কাঁচা কলা বা বেশি পাকা কলা খেলে হজমের সমস্যা বা অ্যাসিডিটি হতে পারে।

সর্দি কাশি:

  • যাদের ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি বা সর্দি কাশি আছে। তাদের কলা খেলে সেসব সমস্যা বাড়তে পারে।

গ্যাস্ট্রিক ও এলার্জি:

  • কিছু মানুষের কলার প্রতি এলার্জি থাকতে পারে এবং অতিরিক্ত কলায় গ্যাস বা পেট ফাঁপা দূর করতে সাহায্য করে।

রাতের বেলা:

  • আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুযায়ী রাতে বা ঘুমানোর আগে কলা খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে অনিদ্রায় সমস্যা হতে পারে।

সবশেষ আমার মন্তব্য?

আজকের আর্টিকেল এই পর্যন্তই। আশা করছি আপনারা সম্পূর্ণ আর্টিকেল টি পড়েছেন এবং কলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। 

কলা কাদের খাওয়া উচিত আর কাদের খাওয়া উচিত নয় সে সকল তথ্য সম্পর্কেও বিস্তারিত জানতে এবং বুঝতে পেরেছেন। আপনারা সম্পূর্ণ আর্টিকেল টি মনযোগ সহকারে পড়লে সম্পূর্ণ তথ্যগুলো পেয়ে যাবেন। আজ এই পর্যন্তই সম্পূর্ণ আর্টিকেল টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ইনফবারী ২৪নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url